কাঠগড়ায় বিজেপি! পোস্টারিং ঘিরে শিলচরে তীব্ৰ উত্তেজনা ভোটের আগের রাতে
- বার্তালিপি ডেস্ক
- - এপ্রিল ১, ২০২১
ভোটের আগের রাতে (বুুুধবার) শহর জুড়ে পোস্টারিং করতে বেরিয়ে হাতেনাতে ধরা পড়ল তিন যুবক৷ অভিযোগ, তারা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে সবুজ কালিতে ছাপা বদরুদ্দিন আজমল, রাহুল গান্ধী ও শিলচরের কংগ্ৰেস প্ৰাৰ্থী তমালকান্তি বণিকের ছবির কোলাজ দিয়ে তৈরি পোস্টার বিভিন্ন জায়গায় সেঁটে দিচ্ছিল৷ আর, এমন সবুজ কালিতে ছাপা পোস্টার লাগাতে গিয়েই অম্বিকাপট্টি-চাৰ্চরোডে যুবকংগ্ৰেস কৰ্মীদের কাছে হাতেনাতে ধরা পড়ে অটো চালক সহ ওই তিন যুবক৷ সঙ্গে সঙ্গে খবর দেওয়া হয় পুলিশে৷ পুলিশ ওই যুবকদের আটক করে সদর থানায় নিয়ে যায়৷
উত্তেজিত জনতা ও পুলিশের প্ৰাথমিক জেরার মুখে ওই তিন যুবক জানায়, বিজেপির কাছাড় জেলার সাধারণ সম্পাদক বিপ্লব দেবনাথের কথায় এভাবে শহর জুড়ে পোস্টারিং করতে বেরিয়েছে তারা৷ মূলত টাকার বিনিময়েই নাকি পোস্টারিং করতে রাজি হয়েছে যুবকরা৷ তবে কত টাকা, এর পরিমাণ অবশ্য বলেনি৷ আটক অটো থেকে প্ৰায় দু’তিন হাজার পোস্টার, গমের বালতি ইত্যাদিও উদ্ধার করা হয়৷ অটোর নম্বর এএস ১১ সি আই ৮৮৭১৷
ঘটনার বিবরণে জানা গেছে, এদিন রাত সাড়ে ৮.৩০টা নাগাদ মালুগ্ৰাম এলাকা থেকে প্ৰথমে খবর আসে যে, ওখানে কে বা কারা কিছু সবুজ কালিতে ছাপা পোস্টার সেঁটে গিয়েছে৷ মূলত তমাল বণিককে বেকায়দায় ফেলতেই মডেল কোড অব কনডাক্ট চলাকালীন এমন পোস্টারিংয়ের অভিযোগ উঠে৷ বিষয়টি জানাজানি হতেই প্ৰাক্তন পুর কমিশনার তথা কংগ্ৰেস নেতা অলক কর খবর দেন বিভিন্ন ওয়াৰ্ডের কংগ্ৰেসি কৰ্মকৰ্তাদের৷ প্ৰতিটি এলাকায় নজরদারি শুরু করে যুব কংগ্ৰেসের ছেলেরা৷ সেই সূত্ৰ ধরেই ২২ নম্বর ওয়াৰ্ডে গিয়ে ধরা পড়ে যায় তিন যুবক সহ একটি অটো৷ যুব কংগ্ৰেসের কুশল দত্ত (রনি) সহ পাঁচ-ছ’জন কৰ্মীই পোস্টারিং করতে থাকা ওই যুবকদের প্রথমে আটক করে৷ যেহেতু এটা আবাসিক এলাকা, তাই পাড়ার লোকজনও বেরিয়ে পড়েন৷ ডাকা হয় পুলিশ৷ প্ৰাথমিক জেরার মুখে ওই তিন যুবক জানায়, তাদের নাম বিশ্বজিৎ মালাকার, রাহুল দেবনাথ ও লক্ষ্মণ দেবনাথ৷ তিন জনের মধ্যে দু’জনের বাড়ি মালুগ্ৰাম৷ তবে বিশ্বজিতের মূল বাড়ি কাটিগড়ায় হলেও মালুগ্ৰাম এলাকাতেই ভাড়া থাকে সে-ও৷ মূলত, তারাপুরের হরিদাসী প্ৰেস থেকেই এগুলো ছাপা হয়েছে বলেও জেরার মুখে উল্লেখ করে ধৃত যুবকরা৷ তারা এটাও জানায় যে, আরও কয়েকটি অটো এবং গাড়িতে করে কিছু যুবক শহর জুড়ে এমন পোস্টারিং করছে৷
রাতে ঝড়বৃষ্টি ও লোডশেডিংয়ের আড়াল নিয়েই এসব পোস্টারিং চলছিল বলে অভিযোগ করছেন কংগ্ৰেসিরা৷ ঘটনার খবর পেয়ে অতনু ভট্টাচাৰ্য, শৈবাল দত্ত, সজল বণিক, রঞ্জন রায়, অলক কররা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে ওই যুবকদের পুলিশের হাতে তুলে দেন৷ সেই সঙ্গে ঘটনার তীব্ৰ প্ৰতিবাদ জানিয়ে কাঠগড়ায় তোলেন বিজেপিকে৷ ভোটে সাম্প্ৰদায়িক মেরুকরণ ঘটাতে ও তমাল বণিকের স্বচ্ছ ভাবমূর্তি নষ্ট করতে ভোটের আগের রাতে এই চক্রান্ত করছে বিজেপি, এমনটা অভিযোগ করেন উপস্থিত কংগ্ৰেসিরা৷
রাত এগারোটার পর চাৰ্চরোডের ওই ঘটনার খবর প্ৰতিটি ওয়াৰ্ডে ছড়িয়ে যায়৷ সোশ্যাল মিডিয়াতেও ভাইরাল হয় ওই ঘটনার ভিডিও৷ ফলে, কংগ্ৰেসিরা মধ্য রাত অবধি শহরের কোথায় কোথায় এমন পোস্টারিং হচ্ছে, তা খুঁজতে বেরিয়ে পড়েন৷ এবং বিলপার, রাধামাধব রোড সহ বিভিন্ন এলাকায় পোস্টারের সন্ধান পান বলেও জানান শৈবাল দত্তরা৷
এ নিয়ে বিজেপির প্ৰতিক্রিয়া জানতে তাদের স্থানীয় নেতা অভ্ৰজিৎ চক্রবৰ্তীকে (ঝলক) ফোন করলেও তিনি ফোন তুলেননি৷
সবমিলিয়ে ভোটের আগের রাতের এই কান্ডে শহর জুড়েই চাপা উত্তেজনা রয়েছে।