আপস প্ৰাৰ্থী মিসবাই, ভোটে অনিশ্চিত রাজদীপ
- বার্তালিপি ডেস্ক
- - মার্চ ১০, ২০২১
কাছাড় জেলার অন্য সব কেন্দ্ৰে কংগ্ৰেস প্ৰাৰ্থী তালিকা মোটামুটি চূড়ান্ত হয়ে গেলেও বড়খলা, কাটিগড়া এবং লক্ষীপুর নিয়ে এখনও তুমুল গোষ্ঠীবাজি চলছে৷ বড়খলা কেন্দ্ৰে পাপন দেবকে প্ৰাৰ্থী করতে মহিলা কংগ্ৰেস সভানেত্ৰী সুস্মিতা দেব গোঁ ধরে থাকলেও আরেকটি মহল মি নাথকে প্ৰাৰ্থী করতে চায়৷ আবার কংগ্ৰেসের কেন্দ্ৰীয় পৰ্যবেক্ষক জিতেন্দ্ৰ সিং বড়খলার পরিস্থিতি পৰ্যবেক্ষণ করে রাজ্যের প্ৰাক্তন মন্ত্ৰী মিসবাহুল ইসলাম লস্করের পক্ষেই সওয়াল করছেন৷
এই অবস্থায় আসনটি নিয়ে দড়ি টানাটানি এমন পৰ্যায়ে পৌঁছেছে যে শেষ পৰ্যন্ত কংগ্ৰেস সভানেত্ৰী সোনিয়া গান্ধীকেও এ ব্যাপারে হস্তক্ষেপ করতে হয়৷ তিনি টেলিফোনে জিতেন্দ্ৰ সিংকে সাফ জানিয়ে দেন, যে জটিলতার সৃষ্টি হয়েছে তা কাটিয়ে উঠতে তৃতীয় কোনও প্ৰাৰ্থীকে টিকিট দিয়ে সমস্যা সুরাহার চেষ্টা করা হোক৷ এই অবস্থায় মিসবাহুল ইসলাম লস্করের টিকিট পাওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিলেও অনেকেই এখনও কংগ্ৰেস সভাপতির এই সূত্ৰ ঠিক মেনে নিতে পারছেন না৷ কারণ বড়খলা প্ৰাৰ্থীর ওপর কাটিগড়ার প্ৰাৰ্থী মনোনয়নও অনেকটাই নিৰ্ভরশীল৷ তবে কাছাড় জেলা ইউডিএফ সূত্ৰে বলা হয়েছে, বড়খলা আসনটি তারা কংগ্ৰেসের জন্যই ছেড়ে দিতে প্ৰস্তুত৷ কিন্তু বিনিময়ে কাটিগড়া কেন্দ্ৰটি অবশ্যই সংযুক্ত গণতান্ত্ৰিক মোৰ্চা (ইউডিএফ)-কে ছেড়ে দিতে হবে৷ কাটিগড়ায় সম্ভবত ইউডিএফ প্ৰাৰ্থী হতে চলেছেন খলিল উদ্দিন মজুমদার৷ যিনি দীৰ্ঘদিন ধরেই দলের টিকিটের জন্য লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন৷ রাজনৈতিক মহলের অভিযোগ, খলিল প্ৰথম দিকে কয়লা সিন্ডিকেটের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন৷ পাঁচগ্ৰামের বাসিন্দা খলিল উদ্দিন কাটিগড়ার বেতাজ সম্ৰাট বলেই সাধারণ মানুষ মনে করেন৷ বিজেপি প্ৰাৰ্থী গৌতম রায়ের সঙ্গে সমানে সমানে টক্কর দিতে হলে তাঁকেই প্ৰয়োজন বলে দাবি করছে ইউডিএফ দল৷ তবে এই সমীকরণ মুহূৰ্তে পা েযেতে পারে যদি কংগ্ৰেস মিসবাহুলকেই প্ৰাৰ্থিত্ব দেয়৷ সে ক্ষেত্ৰে কোনও হিন্দু কংগ্ৰেস নেতার নামও কাটিগড়ায় চলে আসতে পারে৷
দলীয় সূত্ৰ অনুযায়ী, বড়খলায় মুসলিম প্ৰাৰ্থী দেওয়া হলে কাটিগড়ায় হিন্দু প্ৰাৰ্থী দিতে হবে৷ সেই ক্ষেত্ৰে মি নাথের টিকিট নিশ্চিত করতে অনেকেই কাটিগড়ায় প্ৰদেশ যুব কংগ্ৰেস সভাপতি কমল ইসলামের নাম প্ৰস্তাব করেন৷ কিন্তু মুশকিল হল, কমলের জন্মই শুধু কাটিগড়ায়, বাকি তাঁর শিক্ষা জীবন থেকে শু করে রাজনৈতিক জীবনের বেশিরভাগ সময়ই কেটেছে গুয়াহাটিতে৷ ফলে কাটিগড়ায় তৃণমূল স্তরের সঙ্গে তাঁর যোগাযোগ ততটা মজবুত নয়৷ সোমবার টেলিফোনে মিসবাহুল ইসলাম লস্কর জানিয়েছেন, শুনেছি প্ৰাৰ্থী তালিকায় আমার নাম রয়েছে৷ তবে আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা না হওয়া পৰ্যন্ত আমি এ নিয়ে কোনও প্ৰতিক্রিয়া জানাব না৷ অতীতের অভিজ্ঞতায় দেখা গেছে, ২০১১ সালেও বড়খলায় কংগ্ৰেস প্ৰাৰ্থী হিসেবে মিসবাহুলের নামই অনুমোদিত হয়েছিল৷ কিন্তু পরবৰ্তীকালে সেখানে তাঁর নাম কেটে মি নাথকে টিকিট দেওয়া হয়৷ পাা হিসেবে সে সময় মিসবাহুল নিৰ্দল প্ৰাৰ্থী হয়েই বড়খলায় প্ৰতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন৷
তবে এই দু’টি কেন্দ্ৰ ছাড়া কাছাড় জেলার বাকি কেন্দ্ৰগুলোর প্ৰাৰ্থী তালিকা মোটামুটি চূড়ান্ত হয়েছে৷ যেমন ধলাইয়ে কামাখ্যাপ্ৰসাদ মালা, শিলচরে তমাল বণিক, উধারবন্দে অজিত সিং৷ লক্ষীপুরের প্ৰাৰ্থী নিয়ে এমনিতে কোনও জটিলতা নেই৷ কিন্তু প্ৰাক্তন বিধায়ক রাজদীপ গোয়ালা আবার যদি দলীয় প্ৰাৰ্থী হওয়ার জন্য দাবি তোলেন সেইক্ষেত্ৰে মুকেশ পাণ্ডের কী হবে, এই প্ৰটিও কংগ্ৰেস নেতৃত্বকে বেশ কঠিন পরিস্থিতির মধ্যে ফেলে দিয়েছে৷ কারণ লক্ষীপুরে তাঁকে প্ৰাৰ্থী করা হবে, এই আশ্বাস দিয়েই গুয়াহাটিতে নিয়ে গিয়েছিলেন কংগ্ৰেস নেতারাই৷ এবং তাঁকে দলে নেওয়ার পৰ্ব সারা হয়েছিল৷ এখন মুকেশ যদি রাজদীপের প্ৰাৰ্থিত্বের বিরোধিতা করেন সেইক্ষেত্ৰে আবার ওই কেন্দ্ৰটি নিয়ে নতুন করে জটিলতা সৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে৷ এই প্ৰতিবেদন লেখা পৰ্যন্ত লক্ষীপুরে গিয়ে পৌঁছননি রাজদীপ গোয়ালা৷ জানা গেছে, আগামীকাল রাজদীপ গোয়ালা লক্ষীপুরে গিয়ে তাঁর অনুগামীদের সঙ্গে বৈঠক করবেন৷ তবে তাঁর ঘনিষ্ঠ মহল জানিয়েছে, সম্ভবত এ বার তিনি ভোটে দাঁড়াচ্ছেন না৷ কিন্তু রাজনীতিতে শেষ কথা বলে কিছু নেই৷ কাজেই আগামিকাল বৈঠকে কী সিদ্ধান্ত হয় সে দিকেই তাকিয়ে আছেন লক্ষীপুরের বিজেপি প্ৰাৰ্থী সহ তাঁর অনুগামীরা৷