রাজদীপকে মৃদু ভৰ্ৎসনা হিমন্তের, যোগাযোগ করল কংগ্ৰেসও
- পার্থ ভট্টাচার্য
- - মার্চ ৮, ২০২১
কংগ্ৰেস ছেড়ে বিজেপি-তে যোগ দিয়ে এখন রাজদীপ গোয়ালার অবস্থা অনেকটা ‘না ঘর কা না ঘাট কা’৷ কারণ বিজেপি তাঁকে উধারবন্দে টিকিট দিতে চাইলেও তিনি শেষপৰ্যন্ত লক্ষীপুর থেকে দাঁড়ানোর বিষয়টিকে অগ্ৰাধিকার দেন৷ কিন্তু বিজেপি-র প্ৰদেশ নেতৃত্ব তাঁকে পরিস্কার জানিয়ে দেন, দীৰ্ঘদিন ধরেই কৌশিক রায় এই এলাকায় কাজ করছেন৷ সংগঠনকে মজবুত করার ব্যাপারেও উদ্যোগী হয়েছেন৷ এই অবস্থায় তাঁকেই দল টিকিট দেবে৷ বিজেপি দলের প্ৰাৰ্থী তালিকা ঘোষণার পর অনেকটাই ভেঙে পড়েন রাজদীপ গোয়ালা৷
কেন না মুখ্যমন্ত্ৰী সৰ্বানন্দ সোনোয়াল করিমগঞ্জ সফরে এসে সাৰ্কিট হাউসে রাজদীপকে আশ্বাস দিয়েছেন যে, তাঁর লক্ষীপুরে টিকিট দেওয়ার দাবিটি প্ৰদেশ নেতৃত্ব সক্রিয়ভাবে বিবেচনা করে দেখবে৷ পরবৰ্তীকালে তিনি পরিমল শিবিরে যোগ দিলে বেজায় ক্ষুব্ধ হন হিমন্তবিশ্ব শৰ্মা এবং শিলচরের সাংসদ রাজদীপ গোয়ালা৷ শুধু তা-ই নয়, গতকাল রাজদীপ গিয়েছিলেন হিমন্তবিশ্ব শৰ্মার সঙ্গে দেখা করতে৷ রাজ্যের স্বাস্থ্যমন্ত্ৰী তাঁকে স্পষ্ট জানিয়ে দেন, কেন তিনি উধারবন্দে গিয়ে প্ৰচারে নামলেন না? রাজদীপ এ ব্যাপারে সদুত্তর দিতে পারেননি বলেই বিজেপি-র রাজনৈতিক মহল দাবি করেছে৷
কিন্তু হিমন্ত অবশ্য তাঁকে বুঝিয়ে দেন, দল যদি আবার রাজ্যে ক্ষমতায় ফিরে আসে তা হলে তাঁর পুনৰ্বাসনের ব্যবস্থা হবে৷ বৈঠক থেকে উঠে আসার সময় রাজদীপ হিমন্তকে বলেন, আমার কাছে কংগ্ৰেস দলেরও অফার আছে, তখন স্বাস্থ্যমন্ত্ৰী বেজায় ক্ষেপে গিয়ে রাজদীপকে বলেন, ‘এরকম ভুল আর করো না৷ কারণ তা হলে পরে পস্তাতে হবে৷ এখন তোমার বয়স কম কাজেই বার বার দলবদল করে নিজের ভাবমূৰ্তিকে কালিমালিপ্ত করো না৷’ হিমন্তবিশ্ব শৰ্মার ঘনিষ্ঠ মহল এই দাবি করে জানিয়েছে, যদি রাজদীপ কংগ্ৰেসে যান তা হলে কৌশিককে জেতাতে কৰ্মীদের সংঘবদ্ধ হয়ে প্ৰচারে নামতে হবে৷ এই কৌশলকে সমৰ্থনও করেছেন বরাক উপত্যকার সাংগঠনিক সম্পাদক নিত্যভূষণ দে’ও৷
অন্যদিকে, কংগ্ৰেস থেকেও বেশ কিছু নেতা বিশেষত রকিবুল হুসেন এবং গৌরব গগৈ রাজদীপকে বাৰ্তা পাঠিয়েছেন, যদি তিনি ফিরে লক্ষীপুরে দাঁড়াতে রাজি হন তা হলে তাঁকে একটি মাৰ্জনাপত্ৰ দিতে হবে দলকে৷ তা হলে দল সামগ্ৰিক স্বাৰ্থে তাঁর বিষয়টি সক্রিয়ভাবে বিবেচনা করে দেখবে৷ এখনও কংগ্ৰেস দল বরাকের প্ৰাৰ্থী তালিকা ঘোষণা করেনি৷ ফলে রাজদীপ যে লক্ষীপুরে প্ৰাৰ্থিত্ব পাবেন না তা বলা যায় না৷ কংগ্ৰেস মহল দাবি করছে, আচমকা রাজদীপকে টিকিট দিলে বৰ্তমান প্ৰাৰ্থী মুকেশ পাণ্ডের অনুগামীরা আবার ক্ষুব্ধ হয়ে কংগ্ৰেস ছাড়তে পারেন, এই ঝুঁকি নেওয়া কি এখন উচিত হবে?
অন্যদিকে, রাজদীপ গোয়ালা এ দিন টেলিফোনে জানান, সব দলই আমার সঙ্গে যোগাযোগ করছে৷ কিন্তু আগামীকাল আমি শিলচর এসে অনুগামীদের সঙ্গে বৈঠক না করে কোনও সিদ্ধান্ত নেব না৷ লক্ষীপুরের সাধারণ মানুষ যেহেতু দীৰ্ঘদিন ধরে আমার পাশে আছেন তাই তাদের সঙ্গে আলোচনা করেই আমি আমার পরবৰ্তী সিদ্ধান্ত নেব৷ তবে কোনও দলের টিকিট না পেলেও আমি যে সমাজসেবায় থাকব, সে কথাটা আমি এখনই নিশ্চিত করে বলতে পারি৷ রাজদীপ ঘনিষ্ঠ মহলের দাবি, উধারবন্দে দাঁড়ালে কাছাড় জেলায় চা-শ্ৰমিকদের একটি আসন কমে যেত৷ এ জন্য বাধ্য হয়েই আমি উধারবন্দ থেকে প্ৰতিদ্বন্দ্বিতার সিদ্ধান্ত নিতে পারিনি৷