আলগাপুর থেকে মনোনয়ন চেয়ে আবেদন অরুণ দত্তমজুমদারের!
- পার্থ ভট্টাচার্য
- - ফেব্রুয়ারী ১৮, ২০২১
শিলচর জেলা কংগ্ৰেসের প্ৰাক্তন সভাপতি অরুণ দত্তমজুমদার এ বার আলগাপুরে দলীয় টিকিট চেয়ে প্ৰদেশ কংগ্ৰেসের কাছে আবেদন করলেন৷ সম্প্ৰতি গুয়াহাটি গিয়ে তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে আলগাপুরে প্ৰাৰ্থী হওয়ার জন্য আবেদন পেশ করেন৷
উল্লেখ্য, ২০১৪ সালে শিলচর উপ-নিৰ্বাচনে অরুণবাবু কংগ্ৰেস দলের টিকিটে প্ৰতিদ্বন্দ্বিতা করলেও বড়সড় ভোটের ব্যবধানে বিজেপি প্ৰাৰ্থী দিলীপ পালের কাছে হেরে যান৷ তবে রাজনৈতিক মহলে প্ৰ উঠেছে, আচমকাই অণবাবু কেন শিলচর কেন্দ্ৰ থেকে আলগাপুরে প্ৰাৰ্থী হওয়ার জন্য আবেদন করলেন? এ ব্যাপারে তাঁকে জিজ্ঞাসা করা হলে অরুণবাবুর পরিস্কার বক্তব্য, আসলে প্ৰশাসনিকভাবে কাছাড় জেলা কংগ্ৰেসেরই আওতায় রয়েছে আলগাপুর৷ জেলা হিসেবে হাইলাকান্দির আসন হলেও আলগাপুরে এর আগেও কংগ্ৰেস প্ৰাৰ্থী হিসেবে রাহুল রায়, মন্দিরা রায় এবং অগপ আমলের প্ৰাক্তন মন্ত্ৰী শহিদুল আলম চৌধুরীও জয়ী হয়েছেন৷
এই কেন্দ্ৰে কেন হঠাৎ অণবাবু প্ৰাৰ্থী হওয়ার জন্য আগ্ৰহ প্ৰকাশ করলেন, তা নিয়ে দলের জেলাস্তরের নেতাদের মধ্যেই কানাঘুৰ্ষো চলছে৷ তা হলে কি অণবাবু বুঝতে পেরেছিলেন, মহিলা কংগ্ৰেসের সৰ্বভারতীয় সভানেত্ৰী সুস্মিতা দেবের বিরোধিতা করে শিলচরে বা কাছাড় জেলার অন্যত্ৰ প্ৰাৰ্থী পদ পাওয়ার তাঁর কোনও সম্ভাবনা নেই? এ ব্যাপারে অবশ্য জেলা কংগ্ৰেস নেতারা মুখ খুলতে রাজি হননি৷ কেন না তাঁরা মনে করেন, প্ৰত্যেক কংগ্ৰেস কৰ্মীরই মনোনয়ন চাওয়ার অধিকার রয়েছে৷ দল যদি মনে করে তিনি ওই কেন্দ্ৰের যোগ্য প্ৰাৰ্থী অথবা বিজয়ী হয়ে আসতে পারেন তা হলে সেখানে তাঁকে টিকিট দেওয়া হতেই পারে৷ তবে কোনওকালেই অরুণবাবু আলগাপুর কেন্দ্ৰের মনোনয়ন প্ৰত্যাশী হতে পারেন, তা বিক্ষুব্ধ কংগ্ৰেসিদেরও ধারণার মধ্যে ছিল না৷
যদিও এককালে প্ৰদেশ রাজনীতিতে অরুণ দত্তমজুমদার প্ৰয়াত মুখ্যমন্ত্ৰী তণ গগৈর ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত হলেও জেলা স্তরে বরাকের কংগ্ৰেস নেতা সন্তোষমোহন দেবের পৃষ্ঠপোষকতায়ই কাছাড় জেলা কংগ্ৰেসের সভাপতি হয়েছিলেন৷ শুধু তা-ই নয়, ’৭৯ সালের পুর ভোটে ১৩ নং ওয়াৰ্ড থেকেই বিজয়ী হয়ে সন্তোষমোহনকে চেয়ারম্যান করার অন্যতম কাণ্ডারিও ছিলেন৷ যদিও পরবৰ্তীকালে সন্তোষমোহনের সঙ্গে তাঁর রাজনৈতিক দূরত্ব বেড়ে যায়৷ রাজনৈতিক মহল মনে করছে, সন্তোষবাবু ওইসময় তাঁকে উপ-সভাপতি না করে প্ৰয়াত সুদীপ দত্তকে পুর বোৰ্ডের উপ-সভাপতি করায় অরুণবাবু বেশ কিছুটা ক্ষুব্ধ হন৷ যদিও সম্পৰ্কের এই জটিলতা দীৰ্ঘদিন বহাল ছিল না৷ পরবৰ্তীকালে তুখোড় কৰ্মী হিসেবে আবার কাছাড় জেলা সভাপতির দায়িত্ব অণবাবুর হাতেই অৰ্পণ করেছিলেন সন্তোষমোহন দেব৷
রাজনৈতিক মহল মনে করছে, আলগাপুরে মনোনয়ন চেয়ে অরুণবাবু নিজেকে বিক্ষুব্ধ কংগ্ৰেসি রাজনীতি থেকে নিজেকে দূরে সরিয়ে নিলেন৷ যদিও এ ব্যাপারে অরুণবাবুর ব্যাখ্যা হল, তিনি কোনওকালেই সুস্মিতা দেবের বিরোধী শিবিরের লোক ছিলেন না৷ বরং তিনি চেয়েছিলেন, সুস্মিতাকে নেত্ৰী হিসেবে মেনে নিয়েই কাছাড় কংগ্ৰেস আবার ঐক্যবদ্ধ হয়ে বিজেপি-র বিদ্ধে ভোটের লড়াইয়ে নামবে৷ যদিও তাঁর এই উদ্যোগ এখনও সফল হবার কোনও লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না৷
এ দিকে, জেলা কংগ্ৰেসের সাধারণ সম্পাদক (প্ৰশাসন) রাজেশ দেব জানিয়েছেন, অরুণবাবু কেন আলগাপুর চলে গেলেন, তা আমরা জানি না৷ তবে নিশ্চয়ই আলগাপুরে তাঁর শক্ত ভিত রয়েছে ভেবেই তিনি সেখান থেকেই মনোনয়ন চেয়েছেন৷ রাজেশবাবু আরও বলেন, আগামীকাল সোনাই এবং লক্ষীপুরে অসম কংগ্ৰেসের পৰ্যবেক্ষক জিতেন্দ্ৰ সিংয়ের সচিব অনিরুদ্ধ সিং বিভিন্ন সমাবেশ করবেন, সেখানে দলের প্ৰাৰ্থী নিয়েও তৃণমূল স্তরের কৰ্মী সহ সাধারণ মানুষের সঙ্গে মত বিনিময় করবেন৷