জোট ছাড়া অসমের ভোটে বিকপ্ল নেই, প্ৰদেশ নেতাদের বাৰ্তা জিতেন্দ্ৰর
- বার্তালিপি ডেস্ক
- - জানুয়ারী ২০, ২০২১
শিলচরে কংগ্ৰেস কাকে প্ৰাৰ্থী করবে সে নিয়ে সমীক্ষা ইতিমধ্যেই শু হয়ে গেছে৷ সমীক্ষার প্ৰাথমিক ফল জানার পরই প্ৰদেশ কংগ্ৰেস প্ৰাৰ্থী মনোনয়নের ব্যাপারটি চূড়ান্ত করবে৷ শিলচরের প্ৰাক্তন সাংসদ সুস্মিতা দেব অবশ্য এ দিন জানিয়েছেন, শিলচরে তাঁর নিজস্ব কোনও প্ৰাৰ্থী নেই৷ শিলচর শহরে এখন যাঁরা কংগ্ৰেসে প্ৰতিনিধিত্ব করেন তাঁদের অনেকেই সুস্মিতা-বিরোধী বলে পরিচিত৷ ফলে তাঁরা কেউ এই সমীক্ষার তালিকায় থাকবেন, এমনটা আশা করা যায় না৷ যদিও সুস্মিতা ঘনিষ্ঠরা জানিয়েছেন, প্ৰদেশ কংগ্ৰেস বা জেলা কংগ্ৰেস থেকে কোনও নাম সমীক্ষক দলের কাছে সুপারিশ করা হয় না৷ তাঁরা নিজেরাই এসে এ সব ব্যাপারে খোঁজখবর করে কেন্দ্ৰীয় কমিটির কাছে রিপোৰ্ট পেশ করেন৷ কাজেই এমন কেউও শিলচর আসনের জন্য সমীক্ষক তালিকায় উঠে আসতে পারেন যিনি আপাতদৃষ্টিতে সুস্মিতা-বিরোধী শিবিরের মুখ হতেও পারেন, না-ও হতে পারেন৷ কিন্তু হালফিলের রাজনীতিতে সত্যিই এমনটা হয় কি না সেটাই এখন লক্ষ টাকার প্ৰ৷
সমীক্ষায় জনপ্ৰিয়তার বিচারে যিনি শীৰ্ষে থাকবেন তাঁর হয়েই ভোটের লড়াইয়ে নেতৃত্ব দেবেন প্ৰাক্তন সাংসদ৷ অৰ্থাৎ শিলচরের ব্যাপারে তাঁর ব্যক্তিগত পছন্দ বা অপছন্দের কেউ নেই৷ অসমের ভারপ্ৰাপ্ত কংগ্ৰেসের কেন্দ্ৰীয় নেতা জিতেন্দ্ৰ সিং পরিস্কার জানিয়ে দিয়েছেন, সমীক্ষার ফল যা-ই হোক না কেন, বরাকে কংগ্ৰেসের আসন সংখ্যা বাড়াতেই হবে৷ এরজন্য ব্যক্তিগত পৰ্যায়ের কোনও তদ্বির না করতে তিনি সব নেতাদেরই স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন৷
এখন প্ৰ হল, বরাকে কংগ্ৰেস সংগঠনের যে হাল তাতে আসন সংখ্যা বাড়ানোর সম্ভাবনা কতটা তা নিয়ে ইতিমধ্যেই দলের কৰ্মীরাই যথেষ্ট সন্দিহান৷ এর কারণ হিসেবে বলা হয়েছে, শিলচর কংগ্ৰেসে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব এতটাই তীব্ৰ এবং মান-অভিমান এমন একটা পৰ্যায়ে পৌঁছেছে যে অনেক নেতা-ই দলের মূল স্ৰোত থেকে নিজেদের বিচ্ছিন্ন করে নিয়েছেন৷
প্ৰকাশ্যে মুখ না খুললেও তাঁরা এ ব্যাপারে সুস্মিতা দেবের অনমনীয় মনোভাবকেই দায়ী করছেন৷ বলা হচ্ছে, প্ৰাক্তন সাংসদ যদি সত্যিই বিজেপি-র বিদ্ধে লড়াইয়ে আগ্ৰহী হন তা হলে সবাইকে নিয়েই তাঁর ভোটযুদ্ধে অবতীৰ্ণ হওয়া জরি৷ গোষ্ঠীবাজি-লবিবাজি অব্যাহত রেখে গেয়া দলের বিদ্ধে ঐক্যবদ্ধ লড়াই করা সম্ভব নয়৷
অন্যদিকে, সুস্মিতার ঘনিষ্ঠ মহল জানিয়েছে, বরাকে যদি এ বার কংগ্ৰেসের ফল ভাল না হয় তা হলে দিল্লিতে এরজন্য প্ৰাক্তন সাংসদকেই জবাবদিহি করতে হবে৷ এই অবস্থায় কেন তিনি দলকে দুৰ্বল করে নিজের ওপর দায়িত্ব টেনে আনবেন সেটাই বুঝে উঠতে পারছেন না তাঁর ঘনিষ্ঠরা৷ বিক্ষুব্ধরা যদি ভেবে থাকেন, দলবিরোধী কাজ চালিয়ে কংগ্ৰেসকে শক্তিশালী করা যাবে বা বিজেপি-র বিদ্ধে লড়াই করার পথ প্ৰশস্ত হবে তা হলে তারা নিজের নাক কেটে পরের যাত্ৰা ভঙ্গ হয়তো করতে পারবেন কিন্তু আখেরে দলের কোনও লাভ হবে না৷
উজান অসমের দিকে চেয়ে প্ৰদেশ কংগ্ৰেসের বেশ কিছু নেতা জিতেন্দ্ৰ সিংহকে গতরাতে বার বার বোঝানোর চেষ্টা করেছিলেন যে, ইউডিএফের সঙ্গে ভোটে জোট হলে একসময়ের কংগ্ৰেসের ঘনিষ্ঠ ঘাঁটি বলে পরিচিত আপার অসমে দলের ফলাফল খারাপ হবে৷ কিন্তু রাজ্যের ভারপ্ৰাপ্ত কেন্দ্ৰীয় নেতা এদের সাফ জানিয়ে দেন, আপনাদের লক্ষ্য যদি বিজেপি-কে ক্ষমতা থেকে উৎখাত করা হয় তা হলে সবার সঙ্গে মিলেমিশেই একটা পরিকপ্লনা প্ৰস্তুত করতে হবে৷ তবে পরে আসন ভাগাভাগি বা কমন মিনিমাম প্ৰোগ্ৰাম কী হবে, এ নিয়ে পরে দফায় দফায় আলোচনা করে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া যাবে৷ কিন্তু এককভাবে লড়াই করে কংগ্ৰেসের পক্ষে একা যে বিজেপি-কে উৎখাত করা সম্ভব নয়, কেন্দ্ৰীয় নেতা বৈঠকে প্ৰদেশ নেতাদের স্পষ্ট এই বাৰ্তা দিয়েছেন৷
জিতেন্দ্ৰ সিংয়ের কথা শুনে প্ৰদেশ কংগ্ৰেস নেতারা অবশ্য বিশেষ কিছু বলেননি৷ এরপরই ঠিক হয়ে যায়, মঙ্গলবার আনুষ্ঠানিকভাবে জোটের বিষয়টি প্ৰকাশ্যে ঘোষণা করা হবে৷ কিন্তু রাজনৈতিক মহল মনে করছেন, ঐক্যবদ্ধভাবে লড়াই না করে শুধু এককভাবে ভোটে নামলে কংগ্ৰেসের ফল খারাপই হবে৷ ভোট কাটাকাটির জেরে বহু কেন্দ্ৰে কংগ্ৰেসকে পরাস্ত হতে হবে৷ জোট করে ঝুঁকি নিয়ে জিতেন্দ্ৰ সিংহ বিজেপি-কে বেশ কঠিন পরিস্থিতির মধ্যে ফেলে দিয়েছেন৷ কারণ এককালের কংগ্ৰেস নেতা বৰ্তমান মন্ত্ৰিসভার দ্বিতীয় ক্ষমতাশালী মন্ত্ৰী হিমন্তবিশ্ব শৰ্মাও মনে করেন জোট হলে সংখ্যালঘু এলাকায় কংগ্ৰেস হয়তো কিছুটা বাড়তি সুবিধা পাবে কিন্তু আঞ্চলিক দলগুলো মাঠে থাকায় তারা যে ভাল ফলের আশা করছেন সেটা বাস্তবায়িত হবে না৷