সীতার সঙ্গে হাথরসের নির্যাতিতার তুলনা, বিপাকে কল্যাণ, মামলা
- বার্তালিপি ডেস্ক
- - জানুয়ারী ১৩, ২০২১
ভোটের আগে প্রতিপক্ষকে আক্রমণ করতে গিয়ে অনেক ক্ষেত্রেই রাজনীতিকদের জিভে লাগাম থাকছে না। তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের এমনই এক বেফাঁস মন্তব্য নিয়ে শোরগোল পড়েছে বাংলার রাজনীতিতে। হাথরসের নির্যাতিতা তরুণীর সঙ্গে সীতার তুলনা টেনে বিপাকে পড়েছেন শ্রীরামপুরে তৃণমূল সাংসদ। হাওড়া জেলার গোলাবাড়ি থানায় ইতিমধ্যে কল্যাণের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের হয়েছে। শুধু তাই নয়, সোমবার সন্ধ্যায় তাঁকে ফোন করে রীতিমতো হুমকি দেওয়া হয় বলে জানা গিয়েছে। এই উড়ো হুমকি ফোনের উৎস সন্ধানে তদন্ত শুরু করেছে কালীঘাট থানার পুলিশ।
সম্প্রতি ব্যারাকপুরের এক জনসভায় বিজেপিকে আক্রমণ করতে গিয়ে রাম-সীতার প্রসঙ্গ টেনে তার সঙ্গে হাথরসের নির্যাতিতা তরুণীর তুলনা জুড়ে দেন কল্যাণ। বিজেপির কর্মীদের কার্যত 'রামের চেলা' বলে বিঁধতে গিয়ে সীতার সঙ্গে হাথরসের নির্যাতিতার তুলনা টেনে বসেন। দেখতে দেখতে সেই জনসভার ফুটেজ ভাইরাল হয়ে যায়। এর বিরুদ্ধে নিন্দা ও 'হিন্দু ভাবাবেগকে আহত করার' আভিযোগে সরব হয়েছে গেরুয়া শিবির। এর বিরুদ্ধে টুইটারে সরব হয়ে কল্যাণকে 'মুলো' বলে পাল্টা আক্রমণ শানান বরিষ্ঠ বিজেপি নেতা তথা ত্রিপুরার প্রাক্তন রাজ্যপাল তথাগত রায়।
ব্যারাকপুরের ওই জনসভার ভিডিও পোস্ট করে তথাগত পরিস্কার বাংলায় লিখেছেন, 'আপনি কি হিন্দু? তবে কান খুলে শুনে নিন নিজের ধর্মকে চরম অবমাননাকারী হিন্দু নামধারী এই মুলোটির বক্তব্য! হিন্দু ধর্মের প্রতি চরম ঘৃণা না প্রকাশ করলে প্রকৃত মুলো হওয়া যায় না।' তথাগত তাঁর টুইটার হ্যান্ডেলে ইংরেজিতেও লিখেছেন, 'এই লোকটাকে চেনেন? কল্যাণ ব্যানার্জি, হিন্দু ব্রাহ্মণের নামধারী একজন তৃণমূল সাংসদ।' এরপরই কল্যাণের করা উক্তির উদ্ধৃতি
তুলে ধরেছেন টুইটারে, যেখানে তৃণমূল সাংসদকে বলতে শোনা যায়, 'সীতাজি রামকে গিয়ে বলেন, আমার কপাল ভালো যে রাবণ আমাকে অপহরণ করেছে। মাথায় গেরুয়া ফেট্টি বাঁধা তোমার চেলারা হলে আমার দশাও উত্তরপ্রদেশের হাথরসের ওই ধর্ষিতা মেয়েটার মতো হতো।'
কল্যাণের এই ভাষণের ভিডিও ফুটেজ দিয়ে গোলাবাড়ি থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন জনৈক আশিস জয়সোয়াল। স্থানীয় সূত্রের খবর, জয়সোয়াল বিজেপি যুবমোর্চার সদস্য। থানায় দায়ের করা অভিযোগে তিনি বলেছেন, 'সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় দেশ তথা বিশ্বের সমস্ত হিন্দুর ধর্মীয় ভাবাবেগে আঘাত করেছেন। বিশ্বজুড়ে হিন্দুরা সীতাকে দেবীজ্ঞানে আরাধনা করেন এবং হিন্দু সমাজে সীতা সম্মানের উচ্চ আসনে প্রতিষ্ঠিত।' জয়সোয়াল এমন কথাও বলেছেন, কল্যাণের এই 'অসাংবিধানিক, বেআইনি ও বিদ্বেষ ভরা মন্তব্যে হিন্দুরা ব্যথিত ও ক্রুদ্ধ।' এর ফলে সমাজে 'রক্তপাতের পূর্ণ আশঙ্কা রয়েছে' বলেও তিনি অভিযোগপত্রে উল্লেখ করেছেন। এ নিয়ে পুলিশের কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া না গেলেও নবান্নের একটি সূত্রে প্রকাশ, শ্রীরামপুরের তৃণমূল সাংসদের নিরাপত্তা বৃদ্ধির চিন্তাচর্চা চলছে।