জিতলেই মন্ত্রী আমিনুল ! জানিয়ে রাখলেন রঞ্জিত
- বার্তালিপি ডেস্ক
- - ডিসেম্বর ২১, ২০২০
২১-এর নির্বাচনে সারা রাজ্যে বিজেপি-র লক্ষ্য একশ' আসন। এই মিশন ১০০+ এর রণকৌশল তৈরি করতেই বরাকে ঘুরছেন রাজ্য বিজেপির সভাপতি রঞ্জিত দাস। তিনি এখানে দলীয় টিকিট বন্টন করতে আসেননি। এটা তাঁর এক্তিয়ারে নেই। টিকিট দেবে কেন্দ্রীয় কমিটি। রবিবার সোনাইয়ে দলের 'কার্যকর্তা সম্মেলন'-এ অংশ নিয়ে এ কথা বলেন গেরুয়া দলের রাজ্য সভাপতি রঞ্জিত দাস। এ দিন, পড়ন্ত বিকেলে শিলচর-আইজল জাতীয় সড়কের কাজিডহর তেমাথার পাশে অনুষ্ঠিত হয় সোনাইর কর্মী সম্মেলন। ধলাইয়ের 'কার্যকর্তা সম্মেলন' শেষ করে এখানে পৌঁছান রঞ্জিত দাস অ্যান্ড কোম্পানি। জেলা সভাপতি কৌশিক রাইয়ের পৌরোহিত্যে অনুষ্ঠিত সম্মেলনে টিকিট বন্টন করতে আসেননি বললেও পরোক্ষে বর্তমান বিধায়ক আমিনুল হক লস্করের টিকিট পাওয়ার নিশ্চয়তাই দিয়ে গেলেন রঞ্জিত। বলেন, তিনি সোনাইয়ে পা দিয়েই আঁচ করেছেন, আমিনুলকে খুবই ভালবাসে মানুষ। তিনিও ভালবাসেন। এবার তো বিধানসভার উপাধ্যক্ষ বানানো হয়েছে। একুশে জয়ী হলে আমিনুলকে মন্ত্রী বানানো হবে, কথা দেন রাজ্য সভাপতি। দলীয় কর্মীদের উদ্দেশে রঞ্জিতের বার্তা, রাজ্যে লক্ষ্যমাত্রা ১০০+ আসন আর সোনাইয়ে লক্ষ্যমাত্রা ৮০ হাজার ভোট। সেই লক্ষ্যে কাজ করে যেতে কর্মীদের আহ্বান জানান সভাপতি।
মিশন ১০০+ কীভাবে পূরণ হবে, তারও রোডম্যাপ কর্মীদের সামনে তুলে ধরেন রঞ্জিত। জানান, বর্তমানে দলের দখলে থাকা ৬০ ও অগপ-র ১৪-- এই ৭৪ আসন ধরে রাখার পাশাপাশি বরাক থেকে আরও চারটি আসনে জয় চাই। বর্তমানে বরাকে দখলে থাকা ৮ আসনকে ১২ তে নিয়ে যেতে হবে। এছাড়া উজান আসামে আরও ৮ টি নতুন আসন দখলে আসবে দলের। এই ৮ আসনের নামও জানিয়ে দেন আত্মবিশ্বাসী রঞ্জিত। আসনগুলো হল-- গোলাঘাট, মরিয়নি, নাওবৈছা, সরুপাথার, ডিব্রুগড়, নাজিরা, তিতাবর ও শিবসাগর। বর্তমানে নির্দল বিধায়কের দখলে থাকা জোনাইও হিসাবে রাখেন বিজেপি সভাপতি। এছাড়া, সোনাই মডেল'-এ রাজ্যের ৭ টি আসনে সংখ্যালঘু সম্প্রদায় থেকে প্রার্থী দেওয়া হবে।
শুধু আসনের হিসাব দিয়েই থামেননি রাজ্য বিজেপির সভাপতি। কেন তিনি জয় নিয়ে এতটা আত্মবিশ্বাসী, তারও কারণ ব্যাখ্যা করেন। বলেন, রাজ্য ও কেন্দ্র সরকারের কোনও না কোনও প্রকল্প থেকে সুবিধা পেয়েছেন এমন ৯২ লক্ষ লোক রয়েছেন গোটা রাজ্যে। এই ৯২ লক্ষ লোকের ভোটকেই পাখির চোখ করেছেন তাঁরা। রাজ্যে মোট ভোটার রয়েছেন দু'কোটি। ৭৫ শতাংশ ভোট পড়লে হবে দেড় কোটি। আর ওই দেড় কোটিতে ৯২ লক্ষ পেয়ে গেলে হেসে খেলে সরকার গঠন করতে পারবে বিজেপি, বলেন রঞ্জিত। ওই ৯২ লক্ষ ভোটারের কাছে পৌঁছাতে আগামী ৩ জানুয়ারি সারা রাজ্যে তাঁরা আয়োজন করছেন 'বুথ কি বাত'। মোট ২৮ হাজার বুথ রয়েছে রাজ্যে। ওই ২৮ হাজার বুথেই একযোগে হবে 'বুথ কি বাত'। এতে প্রতিটি বুথের আওতাধীন সরকারি সুবিধাপ্রাপকদের কাছে ভোট চাইবেন দলীয় কর্মীরা। সোনাইর ২১৯ বুথেও ওইদিন 'বুথ কি বাত'-কে সফল করে তুলতে কর্মীদের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।
এ দিন সোনাইর বিধায়ক আমিনুল হক লস্করের উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডের বিস্তৃত বিবরণ সংবলিত একটি বইরেও আবরণ উন্মোচন করেন দলের রাজ্য সভাপতি। বলেন, এই বইয়ে সব উন্নয়নমূলক কাজের খতিয়ান লিপিবদ্ধ রয়েছে। একটাও মিথ্যে কথা নেই। এই বইয়ে কোনও মিথ্যে কথা কেউ বের করতে পারলে তিনি এক লক্ষ টাকা পুরস্কার দেবেন বলেও ঘোষণা দেন রঞ্জিত দাস।
এছাড়াও এ দিনের কর্মী সম্মেলনে বক্তব্য পেশ করেন রাজ্য বিজেপি-র দুই সাধারণ সম্পাদক ফণিভূষণ শর্মা ও তপন গগৈ, সাংসদ রাজদীপ রায়, উপাধ্যক্ষ আমিনুল হক লস্কর, সোনাই প্রভারী দ্বীপায়ন চক্রবর্তী প্রমুখ। ৭০০ আসন বিশিষ্ট সম্মেলন স্থলে প্রায় সব আসনই পূর্ণ ছিল।