রিয়াং শরণার্থী পুনর্বাসন ইস্যুতে শনিবার অগ্নিগর্ভ হয়ে উঠল উত্তর ত্রিপুরার ডলুবাড়ি গ্রাম। আমজনতাকে সামাল দিতে গুলি চালাতে বাধ্য হয়েছে পুলিশ। গুলিতে মারা গেছেন এক ব্যক্তি। আহত হয়েছেন কমেও ১৫ জন। সূত্রের খবর এমনটাই। জানা গেছে, পুলিশ-জনতা তুমুল বিরোধের জেরে একসময় নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায় পরিস্থিতি। আগুনে জ্বলে যানবাহনও।লাঠিচার্জ, টিয়ার গ্যাস এসব কিছুতেই আটকানো যাচ্ছিল না সাধারণ মানুষকে। তারপরই গুলি চালায় পুলিশ।
মিজোরাম থেকে রাজ্যে আশ্রয় নেওয়া রিয়াং শরণার্থীদের শুধুমাত্র কাঞ্চনপুরে পুনর্বাসন দেওয়ার বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন ধরেই বেশক'টি সংগঠন একজোট হয়ে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে। ১৬ নভেম্বর থেকে আরও জোর গতি পেয়েছে আন্দোলন। বনধ, অবরোধ ইত্যাদি চলছে জেলায় জেলায়। তাঁদের দাবি, শুধু কাঞ্চনপুর কেন সব শরণার্থীর বোঝা নেবে। রাজ্যের ৮ জেলায় ভাগ করে দেওয়া হোক এই পুনর্বাসন।
উল্লেখ্য, মিজোরামে মিজো-রিয়াং বিবাদ শুরু হওয়ার পর মিজোরাম ও ত্রিপুরার বিভিন্ন শরণার্থী শিবিরই এখন রিয়াং উপজাতির ঠিকানা। ১৯৯৭ সাল থেকে শুধু ত্রিপুরায় আনুমানিক ৩০ হাজার রিয়াং শরণার্থী রয়েছেন।
এ দিকে, গোটা ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়েছে সারা বাঙালি যুব ছাত্র সংস্থা। সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি চন্দন চ্যাটার্জি এই ইস্যুতে ত্রিপুরা সরকারকে একহাত নেন। বলেন, ৭ মাস ধরে সম্পূর্ণ গণতান্ত্রিকভাবে চলছে আন্দোলন। এ দিনও শান্তিপূর্ণ অবস্থানে ছিলেন আন্দোলনকারীরা। অথচ কোন পরিস্থিতি বিবেচনায় সরকার গুলি চালানোর নির্দেশ দিল তার কারণ খুঁজে পাচ্ছে না ছাত্র সংস্থা। ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী তাঁর খুশিমতো কাজ করছেন। বস্তুত একনায়কতন্ত্র চালাচ্ছেন তিনি। যার ফলস্বরূপ নিরস্ত্র এক সাধারণ মানুষ শ্রীকান্ত দাসের মৃত্যু হল। তাঁকে শহিদ বলে উল্লেখ করেন চন্দনবাবু। তিনি আরও জানান, রাজ্য সরকার মনে করেছিল স্বৈরাচারী শাসন চালিয়ে যাবে। আর বাঙালিদের দাবি উপেক্ষা করে রিয়াংদের পুনর্বাসন দিয়ে দেবে। কিন্তু তা আলবত সম্ভব নয়। রক্ত দিয়ে হলেও অধিকার ও দাবি আদায়ের আন্দোলন চালিয়ে যাবে বাঙালি, সাফ মন্তব্য চন্দনের। রাজ্য বিজেপি সরকারের কাছে সংগঠনের তরফে এই রিয়াং শরণার্থী সমস্যার স্থায়ী সমাধান দাবি করেছে তিনি।