বার্তা লিপি প্রতিবেদন শিলচর,২৪ নভেম্ব
বার্তা লিপি প্রতিবেদন শিলচর,২৪ নভেম্বর : গোপন তথ্যের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে পুলিশ শিলচরের বিভিন্ন স্থান থেকে বাজেয়াপ্ত করল প্রচুর পরিমানের কফ সিরাপ ও নেশাযুক্ত ট্যাবলেট। এসব সামগ্রির সঙ্গে গ্রেফতার করা হয়েছে ৪ জনকে । ধৃতদের মধ্যে একজন মেডিসিন রিপ্রেজেন্টিভও রয়েছে।
ধৃতরা হল সোনাই উত্তর মোহনপুরের বাসিন্দা তথা সোনাবাড়ি ঘাটে অবস্থিত 'চৌধুরী ড্রাগস' এর স্বত্বাধিকারী নোবেল হক চৌধুরী, দুধপাতিল এলাকার বাসিন্দা এবং মালুগ্রামের 'মহাদেব ড্রাগস' ডিলারের স্বত্বাধিকারী সঞ্জয় দাস (২৯), ইটখোলা ক্ষুদিরাম সরণির রাজ থাপা (৪০) ও মেডিসিন রিপ্রেজেন্টিভ শ্রীকোণা আই টি আই সংলগ্ন এলাকার রাজীব সিনহা (৩৪) ।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, গোপন তথ্যের ভিত্তিতে মঙ্গলবার সন্ধ্যা রাঙ্গিরখাড়ি পুলিশ দলবল নিয়ে প্রথমে অভিযান চালায় সোনাবাড়ি ঘাটের 'চৌধুরী ড্রাগস' নামে এক ফার্মেসিতে । অভিযান চালিয়ে সেখান থেকে কিছু কফ সিরাপ বাজেয়াপ্ত করা হয়। কফ সিরাপ সহ ফার্মেসির স্বত্বাধিকারী নোবেল হক চৌধুরীকে রাঙ্গিরখাড়ি পুলিশ ফাঁড়িতে নিয়ে আসা হয়। নোবেল হককে
থানায় জিজ্ঞেসবাদ চালানোর পরে নাম উঠে এসে মালুগ্রামের 'মহাদেব ড্রাগস' নামে মেডিসিনের হোলসেল নাম । এরপরে রাত্রেই পুলিশ অভিযান চালায় মহাদেব ড্রাগসে। সঙ্গে তল্লাশি চালানো হয় ওই ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানের গুদামে। ওই দুই স্থান থেকে প্রচুর পরিমাণে কফ সিরাপ এবং নেশাযুক্ত ট্যাবলেট বাজেয়াপ্ত করে পুলিশ।
সঙ্গে আটক করা হয় মহাদেব ড্রাগসের স্বত্বাধিকার সঞ্জয় দাস ও সেলসম্যান রাজ থাপাকে ।
এদেরকে থানায় নিয়ে কফ সিরাপ ও ট্যাবলেট গুলি কার কাছ থেকে ক্রয় করা হয়েছে এ নিয়ে জিজ্ঞেস করা হয়। সঞ্জয়দের জিজ্ঞাসাবাদের সূত্র ধরেই পুলিশ বুধবার সকালে অভিযান চালায় শ্রীকোণা আই টি আই সংলগ্ন রাজীব সিনহার ( মেডিসিন রিপ্রেজেন্টিভ) বাড়িতে। সেখানে তল্লাশি চালিয়ে পুলিশ যথেষ্ট সংখ্যক কফ সিরাপ ও নেশা জাতীয় ট্যাবলেট বাজেয়াপ্ত করে। এসবও বাজেয়াপ্ত করার পাশাপাশি আটক করা হয় মেডিসিন রিপ্রেজেন্টেটিভ রাজীব সিনহাকে।
তিন স্থান থেকে বাজেয়াপ্ত করা প্রচুর পরিমানের এইসব নেশাযুক্ত ঔষধের কোন বৈধ নথি পুলিশের কাছে উপস্থাপন করতে পারেনি ধৃতরা । তাই নেশাযুক্ত ঔষধগুলি বাজেয়াপ্ত করার পাশাপাশি তাদের চার জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
জানা গেছে, বাজেয়াপ্ত করা ট্যাবলেট ৫০ হাজারের চেয়েও বেশি হবে। কফ সিরাপের পরিমাণ ও এক হাজারের কাছাকাছি।
পুলিশের সূত্রটি এভাবে বললেও, রাজীব সিনহা কাজ করা মেডিসিন কোম্পানির একজন কর্মকর্তার দাবি, রাজীবের বাড়ি থেকে পুলিশ বাজেয়াপ্ত করা কফ সিরাপ গুলি কোম্পানির সেম্পল এর ঔষধ। একজন মেডিসিন রিপেজেনটিভ হিসেবে প্রতি এক মাস -দেড় মাসের পর রাজীবকে কোম্পানির পক্ষ থেকে ১০০ থেকে ১৫০ বোটল কফ সিরাপ পাঠানো হয়ে থাকে। এসব স্যাম্পলের বৈধ নথি রয়েছে বলেও দাবি করেন তিনি। এদিকে, রাজিব জানান, মেডিসিন রিপ্রেজেন্টিভের কাজ করার পাশাপাশি তার বাড়িতে রয়েছে একটি ওষুধের দোকান ও। পুলিশ ওই দোকান থেকেও কিছু ট্যাবলেট বাজেয়াপ্ত করেছে। এইসব ট্যাবলেট ক্রয় করার বৈধ নথি থাকা বলে তিনি দাবি করেন।
গ্রেফতারের পর এদিনেই ধৃত চার জনকে আদালতে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু আদালতে পেশ করতে বিলম্ব হওয়ায় তাদেরকে ফের থানায় ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। বৃহস্পতিবার তাদেরকে আদালতে পেশ করা হবে বলে জানা গেছে।