শ্রীমন্ত শঙ্করদেব কলাক্ষেত্রে বাঙালি কৃষ্টি-সংস্কৃতি
রক্ষার্থে একটি সংগ্রহশালা স্থাপন করা হোক, এই দাবি উঠেছে এদিন। কিন্তু সর্বভারতীয়
মহিলা কংগ্রেসের সভানেত্রী সুস্মিতা দেব স্পষ্ট বলেন, রাজ্যের বিজেপি সরকার
কোনোভাবেই বাঙালি সমাজের সংস্কৃতি রক্ষার্থে সংগ্রহশালা স্থাপন করবে না। শিলচরের
প্রাক্তন সাংসদের মন্তব্য, কেবল একটি সংগঠনের সামান্য এক চিঠির দোহাই দিয়ে যাঁরা
ভাষা শহিদ স্টেশনের নামকরণকে আটকে দিল, সেই সরকারের কাছ থেকে সংগ্রহশালার আশা
একেবারেই করা যায় না। অথচ শিলচরে স্টেশনের নাম পরিবর্তন করে ভাষা শহিদের নামে করার
দাবি দীর্ঘদিনের। কিন্তু রাজ্য সরকার সেই দাবিকেই নাগাড়ে উপেক্ষা করে চলেছে।
সুস্মিতার কথায়, একমাত্র কংগ্রেসের আমলেই
বাঙালিদের গুরত্ব দেওয়া হয়েছে। ফলে বাঙালি সংস্কৃতি রক্ষার জন্য সংগ্রহশালা স্থাপনও
একমাত্র সম্ভব রাজ্যে কংগ্রেস দলের সরকার থাকলেই। বিজেপি-র আমলে সেটা হওয়ার কোনও
সম্ভাবনাই নেই।
শ্রীমন্ত শঙ্করদেব কলাক্ষেত্রে বাঙালি কৃষ্টি-সংস্কৃতি
রক্ষার্থে সংগ্রহশালা স্থাপনের দাবি নিয়ে
অসমের মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সনোয়ালের কাছে এক চিঠি প্রেরণ করেছেন উত্তর
করিমগঞ্জের বিধায়ক কমলাক্ষ দে পুরকায়স্থ। কমলাক্ষ এদিন বলেন, অসমের মোট জনসংখ্যার
তিরিশ শতাংশই বাঙালি জনগোষ্ঠী। বস্তুত, বাঙালিরাই রাজ্যের দ্বিতীয় বৃহত্তম জনপদ।
ফলে এই সমাজের সংস্কৃতি অক্ষুণ্ণ রাখার তাগিদে শঙ্করদেব কলাক্ষত্রর মধ্যে একটি
সংগ্রহশালা গড়ে তোলা অত্যন্ত জরুরি। শঙ্করদেব কলাক্ষেত্র সকল জনগোষ্ঠীর কৃষ্টি ও
সংস্কৃতি সংরক্ষণের জন্যই প্রস্তুত করা হয়েছে। দেশের স্বাধীনতা সংগ্রামেও অসমের
বাঙালিদের প্রচুর আত্মত্যাগ রয়েছে। এসব বিষয় আগামী প্রজন্মের কাছে পৌঁছে দেওয়ার জন্যই
কলাক্ষত্রয় বাঙালি সংস্কৃতির ধারক হিসাবে একটি সংগ্রহশালা অত্যন্ত প্রয়োজনীয়।
কমলাক্ষের দাবিকে সমর্থন জানিয়েছে রাজ্যের
অধিকাংশ বাঙালি সংগঠনই। বরাক উপত্যকা বঙ্গ সাহিত্য ও সংস্কৃতি সম্মেলন, সারা অসম
বাঙালি যুবছাত্র ফেডারেশন, সারা অসম বাঙালি ঐক্যমঞ্চ প্রমুখ সংগঠনের প্রতিনিধিরা বলেছেন,
এই দাবি অত্যন্ত ন্যায়সঙ্গত। শঙ্করদেব কলাক্ষত্রয় বাঙালি সংস্কৃতি উপস্থাপনার জন্য
একটি সংগ্রহশালা স্থাপন আবশ্যক।
ওদিকে এই বিষয়ে শিলচরের সাংসদ রাজদীপ রায় কোনও
মন্তব্য করা থেকে বিরতই থাকতে চেয়েছেন। রাজ্যের মন্ত্রী পরিমল শুক্লবৈদ্যর মতামত জানার
চেষ্টা করলেও তাঁকে ফোনে পাওয়া যায়নি।